রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
ProdhanKhabor | Popular NewsPaper of Bangladesh
রবিবার ১০ অগাস্ট ২০২৫ ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নির্বাচন নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র হতে দেয়া যাবে না: ড. খন্দকার মোশাররফ আমাদের নেতা তারেক রহমানকে এদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই: খন্দকার মারুফ দাউদকান্দিতে হেফাজতে ইসলামের জুলাই শীর্ষক আলোচনা সভা আর কোন নব্য ফ্যাসিবাদকে বাংলাদেশে জন্ম হতে দেয়া যাবে না: মনিরুজ্জামান বাহলুল দাউদকান্দিতে ভাষা সৈনিক ড. জসিম উদ্দিন আহমেদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ বাজার ও কালাডুমুর নদীতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে খেলাফত মজলিসের ৬ দফা করণীয় ঘোষণা দেশে প্রথমবারের মতো স্বল্প খরচে নেটিভ এ্যাড প্ল্যাটফর্ম চালু করলো ফেইথ এন্ড ফেয়ার দাউদকান্দিতে খেলাফত মজলিস মনোনীত এমপি প্রার্থীর মোটর শোভাযাত্রা কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অন্তুভূক্ত করার দাবীতে দাউদকান্দিতে মানববন্ধন দাউদকান্দিতে মরহুম ভিপি আব্দুস সাত্তারের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল দাউদকান্দিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা দিলো ছাত্র শিবির দাউদকান্দিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের উদ্যোগে শিক্ষা উপকরন বিতরণ কুমিল্লা সমিতি ঢাকার সভাপতি ও সম্পাদককে মালয়েশিয়ায় উষ্ণ সংবর্ধনা সিঙ্গাপুরে সেরা রেমিটার্স সম্মাননায় ভূষিত হলেন হোল’ কর্পোরেশন” আমার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, বন্ধু, পরিচিত আপনজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণ আমাকে ক্ষমা করে দিবেন বসার জায়গা কেমন হবে জান্নাতে? | প্রধান খবর দাউদকান্দিতে প্রবাসীর পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ বিএনপির গণজোয়ার দেখে মাথা নষ্ট হয়ে গেছে: ড.খন্দকার মারুফ দাউদকান্দিতে ভয়েজার স্কুল এন্ড কলেজে বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত

“গনির দুর্ভিক্ষ” -একটি শিক্ষামূলক গল্প

“গনির দুর্ভিক্ষ” -একটি শিক্ষামূলক গল্প
"পবনপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদেরের একমাত্র ছেলে গনি মিয়া। ছেলেবেলা থেকেই সে মাটির গন্ধ ভালোবাসত। বাবা যখন হাল ধরতেন, সে ছোট্ট হাতে লাঙ্গলের ফলা ধরে রাখার চেষ্টা করত। ধীরে ধীরে সে বড় হলো, আর বাবার মতোই একদিন কৃষক হয়ে উঠল।

গনির চোখে স্বপ্ন ছিল—সবুজ শস্যে ভরে উঠবে তার মাঠ, তার ফসল বিক্রি করে একদিন পবনপুরের সবচেয়ে সফল কৃষক হবে। দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করত সে। সারাদিন মাঠে কাজ করে সন্ধ্যায় যেত পার্শ্ববর্তী হাটে, ফসল বিক্রি করত।

সে কখনো বিলাসী জীবন চায়নি, শুধু চেয়েছিল তার মাটি, তার ফসল, আর এক সুখের সংসার। গনির হাটে যাওয়া-আসার পথে একদিন দেখা হয় রোজির সঙ্গে। রোজি ছিল তার প্রতিবেশী গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে। মেয়েটি ছিল চঞ্চল, হাসিখুশি, প্রাণবন্ত।

প্রথমবার দেখা হওয়ার পর থেকেই দুজনের মধ্যে এক অদৃশ্য বন্ধন তৈরি হয়। প্রতিদিন দেখা হতো, কথা হতো। গনি বুঝতে পারল, সে রোজিকে ভালোবেসে ফেলেছে। কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই সব বদলে গেল। খবর এলো, রোজির বিয়ে ঠিক হয়েছে অন্যত্র।

গনি কিছুই করতে পারল না। সমাজ, পরিবার—সব মিলিয়ে এ যেন এক অদৃশ্য দেয়াল, যা তাদের আলাদা করে দিল। বিয়ের দিন গনি দূর থেকে দেখল, তার ভালোবাসার মানুষ অন্য কারও ঘর আলো করতে যাচ্ছে। এই আঘাত সে সহ্য করতে পারল না। তার হাত থেকে হালের লাঙ্গল পড়ে গেল, পায়ে শক্তি হারিয়ে গেল।

সে আর জমিতে গেল না, আর ফসল ফলাল না। তার শূন্য হৃদয়ের মতোই জমিগুলো অনাবাদী রয়ে গেল। গনির দুঃখ যেন পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ল, কারণ তার চাষ না করায় গ্রামে খাদ্যের সংকট দেখা দিল। কারন হল, গ্রামের বেশিরভাগ জমিই গনি একা চাষাবাদ করত।

বছর কয়েকের মধ‍্যে পবনপুর গ্রামে দুর্ভিক্ষ নেমে এলো। দিন যেতে লাগল, পবনপুরের মানুষ অনাহারে দিন কাটাতে লাগল। আর গনি হয়ে গেল নিঃসঙ্গ, হতাশ, ভগ্নহৃদয় এক মানুষ। একদিন হঠাৎ রোজি ফিরে এলো গ্রামে। সে দেখল, তার একসময়ের প্রেমিক আজ যেন কঙ্কালসার হয়ে গেছে।

তার চোখে আর সেই উজ্জ্বলতা নেই, হাতে নেই হালের লাঙ্গল, মাঠজুড়ে শুধুই অনাবাদী ধুলোবালি। পাড়াজুড়ে হাহাকার! রোজি গনির সামনে এসে দাঁড়াল। বলল, “গনি, তুমি কি জানো, তুমি শুধু নিজের জীবন নয়, পুরো গ্রামটাকেও ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছ? এই মাটি তোমার ভালোবাসার ছিল, তুমি কি তাকে এভাবে অবহেলা করতে পারো?” গনি কিছু বলল না, শুধু নীরবে শুনল।

রোজি আবার বলল, “তুমি যদি সত্যিই আমাকে ভালোবেসে থাকো, তাহলে এই মাটির জন্য কিছু করো। হাল ধরো, জমিতে চাষ করো। পবনপুরকে দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচাও।” গনির চোখের কোণে পানি এলো। সে বুঝতে পারল, তার আসল ভালোবাসা ফসল, প্রকৃতি, তার গ্রামের মানুষ।

সে আবার মাঠে ফিরে গেল। শুরু করল নতুন করে চাষাবাদ। কয়েক মাসের মধ্যেই তার জমি সবুজ হয়ে উঠল, পবনপুরে ফিরে এলো প্রাণচাঞ্চল্য। দুর্ভিক্ষ দূর হলো, মানুষ আবার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।

“গনির দুর্ভিক্ষ”—একটি শিক্ষার গল্প এই ঘটনার পর থেকে পবনপুরের মানুষ একটি শিক্ষা নিল— প্রেম শুধু একজন মানুষের প্রতি নয়, প্রেম হতে পারে প্রকৃতির প্রতি, মাটির প্রতি, গাছের প্রতি, প্রাণের প্রতি। গ্রামের তরুণ-তরুণীরা এখন আর কারও প্রেমে পড়ে না, তারা প্রেমে পড়ে ফসলের সাথে, গাছের সাথে, পুকুরের মাছের সাথে, গোয়াল ভরা গবাদিপশুর সাথে।

আজও যদি কেউ পবনপুর গ্রামে যায়, গ্রামের প্রবেশদ্বারে দেখতে পাবে একটি সাইনবোর্ড— “গনির দুর্ভিক্ষ” এই নাম শুনে সবাই ভাবে, এটি হয়তো একসময়কার ভয়াবহ খাদ্য সংকটের কথা। কিন্তু আসলে এটি এক হারিয়ে যাওয়া প্রেমের গল্প, যা শিখিয়ে গেছে প্রকৃত ভালোবাসা কী।

লেখক: মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন
শাখা ব্যবস্থাপক
জনতা ব্যাংক, দাউদকান্দি শাখা।
নির্বাচন নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র হতে দেয়া যাবে না: ড. খন্দকার মোশাররফ

নির্বাচন নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র হতে দেয়া যাবে না: ড. খন্দকার মোশাররফ